সাধারণত ৮০ পিপিটি অপেক্ষা অধিক লবণাক্ততা সম্পন্ন সমুদ্রের পানিকে ব্রাইন বলা হয়। সাধারণত সমুদ্রের পানির লবণাক্ততা এ মাত্রা কম থাকে। তাই সাধারণত লবণ চাষের ক্ষেত্র থেকে ব্রাইন সংগ্রহ করা হয়। একটি লবণ ক্ষেত্রকে ৩টি ভাগে ভাগ করা যায়।
১. আধার (Reservoir)
২. ঘনীভবনকারক (Condensor)
৩. ফটিকীকারক (Crystalizer)
গলদা চিংড়ি হ্যাচারি পরিচালনার উদ্দেশ্যে ঘনীভবনকারক ক্ষেত্র থেকে ব্রাইন সংগ্রহ করা হয়। সমুদ্রের পানিকে ঘনীভূত করে লবণ উৎপন করা হয়ে থাকে। ঘনীভবনের সাথে সাথে সাগরের পানি থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন অত্যাবশ্যকীয় ট্রেস লবণ, মাইনর লবণ এবং মেজর লবণের উপস্থিতির পরিমাণ কমতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত সাধারণ লবণ (NaCl) অবশিষ্ট থাকে। তাই এ পানি যত ঘনীভূত হতে থাকে, ততই এর মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেস লবণের পরিমাণ কমতে থাকে। অথচ গলদা চিংড়ির জীবনচক্রের প্রাথমিক পর্যায়ে এসব ট্রেস লবণের গুরুত্ব রয়েছে। তাই গলদা চিংড়ি হ্যাচারি পরিচালনার কাজে ১০০-১২০ পিপিটি অপেক্ষা বেশি অপরিসীম লবণাক্ততা সম্পন্ন ব্রাইন ব্যবহার করা উচিত নয়।
ব্রাইনের প্রাপ্তিস্থান: চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলা এবং কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী উপজেলায় সমুদ্রের পানিকে ঘনীভূত করে লবণের চাষ করা হয়। তাই এসব উপজেলার মধ্যে যোগাযোগ সুবিধার উপরে নির্ভর করে চকরিয়া বা বাঁশখালী উপজেলার লবণক্ষেত্র থেকে ব্রাইন সংগ্রহ করা যায়। সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলাধীন মুন্সীগঞ্জ থেকেও ১০০ পিপিটি ব্রাইন সগ্রহ করা যায়। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ব্রাইন সংগ্রহের জন্য উপযুক্ত সময়।
স্বাদুপানি সংগ্রহ: গলদা চিংড়ি হ্যাচারি পরিচালনার জন্য ভূগর্ভস্থ পানি উপযুক্ত। কিন্তু মাঝে মাঝে ভূগর্ভস্থ পানির খরতা এবং বিভিন্ন প্রকার ধাতব যৌগের উপস্থিতি ব্যবস্থাপনাযোগ্য পর্যায়ে থাকে না। তখন এ পানি পরিত্যাগ করে ভূপৃষ্ঠের পানিকে উপযুক্ত পদ্ধতিতে শোধন করে হ্যাচারি পরিচালনার কাজে ব্যবহার করা যায়।
ব্রাইন ও স্বাদু পানির গুণাগুণ:
গলদা চিংড়ি হ্যাচারি পরিচালনার উপযোগী ব্রাইন ও স্বাদু পানির কিছু গুরুত্বপূর্ন গুণাগুণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
ক্রম | গুণাগুণের বিবরণ | সমুদ্রের পানি/ব্রাইন | স্বাদু পানি |
---|---|---|---|
০১ | লবণাক্ততা | ২৮-৩২% (সমুদ্রের পানি) | ০.০৫% |
০২ | তাপমাত্রা | ২৮-৩২° সেন্টিগ্রেড | ২৮-৩১° ° সেন্টিগ্রেড |
০৩ | দ্রবীভূত অক্সিজেন | >৪ পিপিএম | >৪ পিপিএম |
০৪ | পিএইচ | ৭.৫-৮.২ | ৭.৫-৮.২ |
০৫ | খরতা (হার্ডনেস) | ১০০-২০০ পিপিএম | ৮০-১০০ পিপিএম |
০৬ | অ্যালকালিনিটি | ১০০-২০০ পিপিএম | ১৫-১৪০ পিপিএম |
০৭ | লৌহ | <০.১ পিপিএম | <০.১ পিপিএম |
০৮ | অআয়নিত এ্যামোনিয়া | <০.১ পিপিএম | <০.১ পিপিএম |
০৯ | নাইট্রেট-নাইট্রোজেন | <০.২ পিপিএম | <০.২ পিপিএম |
১০ | নাইট্রাইট-নাইট্রোজেন | <০.২ পিপিএম | <০.২ পিপিএম |
১১ | ক্লোরিন | ০ | ০ |
১২ | হাইড্রোজেন সালফাইড | <০.০০৩ পিপিএম | <০.২ পিপিএম |
ভারী ধাতু | <০.০০১ পিপিএম | <০.১ পিপিএম |
আরও দেখুন...